প্রকল্প সমূহ

আমরা সফলভাবে বিভিন্ন ব্যবসায়িক সফটওয়্যার তৈরি করেছি।

ডাইং ফ্যাক্টরি অটোমেশন: প্রতিটি রঙে নির্ভুল প্রযুক্তি, প্রতি ফোঁটা পানিতে স্বচ্ছতা - অটোবিজ ইআরপি সাফল্যের ডিজিটাল কারিগর

অটোবিজ ইআরপি আপনার ডাইং ফ্লোরের ডিজিটাল ব্রেইন

ডাইং বা কাপড়ের রঙ করার প্রক্রিয়াটি টেক্সটাইল শিল্পের সবচেয়ে শৈল্পিক এবং একই সাথে সবচেয়ে বিজ্ঞান-নির্ভর ধাপ। এখানে নিখুঁত রঙের ধারাবাহিকতা (Color Consistency), রাসায়নিকের সঠিক ব্যবহার, পানি ও শক্তির সাশ্রয় এবং পরিবেশগত সুরক্ষা—প্রতিটি বিষয়ই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সামান্য একটি ভুলের কারণে পুরো একটি ব্যাচের কাপড় নষ্ট হয়ে যেতে পারে, যা প্রতিষ্ঠানের জন্য একটি বিশাল আর্থিক ক্ষতি।

অটোবিজ ইআরপি একটি আধুনিক সিস্টেম এই জটিল এবং সংবেদনশীল প্রক্রিয়াটির জন্য একটি ‘ডিজিটাল ব্রেইন’ বা কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রক হিসেবে কাজ করে। এটি ল্যাব থেকে শুরু করে প্রোডাকশন ফ্লোর এবং ডেলিভারি পর্যন্ত প্রতিটি ধাপকে ডেটা ও প্রযুক্তির মাধ্যমে এক সুতোয় বাঁধে, যা নির্ভুলতা, দক্ষতা এবং পরিবেশগত দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করে।

ক্লাউডের উপর ভিত্তি করে তৈরি হওয়ায়, এই অটোবিজ ইআরপি সমাধানটি আপনাকে যেকোনো স্থান থেকে, যেকোনো সময় আপনার ব্যবসার তথ্য অ্যাক্সেস করার সুবিধা দেয়। এটি আপনার উৎপাদন প্রক্রিয়াকে আরও দক্ষ, স্বচ্ছ এবং লাভজনক করে তোলে, যা পোশাক শিল্পের ক্রমবর্ধমান প্রতিযোগিতামূলক বাজারে আপনাকে এগিয়ে রাখতে সাহায্য করবে।

অটোবিজ ইআরপি ডায়ইং ফ্যাক্টরির জন্য বিশেষায়িত মডিউলসমূহ:

১. গ্রে ফেব্রিক ইনভেন্টরি ও ব্যাচ ম্যানেজমেন্ট (Grey Fabric Inventory & Batch Management) এটি ডাইং প্রক্রিয়ার প্রথম ধাপ, যেখানে ফেব্রিক প্রস্তুত করা হয়।

  • গ্রে ফেব্রিক রিসিপ্ট: নিটিং বা উইভিং মিল থেকে আসা প্রতিটি গ্রে ফেব্রিক রোলের বিস্তারিত তথ্য (যেমন: সরবরাহকারী, কাপড়ের ধরন, ওজন) সিস্টেমে গ্রহণ করা।

  • ব্যাচ তৈরি ও ট্র্যাকিং: ডাইং মেশিনের ধারণক্ষমতা অনুযায়ী বিভিন্ন গ্রে ফেব্রিক রোলকে একত্রিত করে একটি ‘ব্যাচ’ তৈরি করা এবং প্রতিটি ব্যাচকে একটি ইউনিক নম্বর দিয়ে পুরো প্রোডাকশন সাইকেল জুড়ে ট্র্যাক করা।

২. ল্যাব ডিপ ও রেসিপি ম্যানেজমেন্ট (Lab Dip & Recipe Management) এটি ডাইং ফ্যাক্টরির হৃৎপিণ্ড এবং সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ।

  • কালার স্ট্যান্ডার্ড লাইব্রেরি: বায়ারের দেওয়া প্রতিটি রঙের স্ট্যান্ডার্ড ডিজিটালভাবে সংরক্ষণ করা।

  • ল্যাব ডিপ রেসিপি তৈরি: নির্দিষ্ট কালার স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী ডাইস এবং কেমিক্যালের সমন্বয়ে একটি নির্ভুল রেসিপি ল্যাবে তৈরি করা এবং এর বিভিন্ন সংস্করণ (Version) সিস্টেমে সংরক্ষণ করা।

  • রেসিপি অনুমোদন ও স্কেলিং: বায়ার কর্তৃক ল্যাব ডিপ অনুমোদিত হওয়ার পর, সেই রেসিপিটি বাল্ক প্রোডাকশনের জন্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে স্কেল-আপ করা। এতে ল্যাবের ছোট রেসিপি থেকে বড় মেশিনের জন্য প্রয়োজনীয় কেমিক্যালের পরিমাণে কোনো ভুল হওয়ার আশঙ্কা থাকে না।

৩. প্রোডাকশন প্ল্যানিং ও মেশিন শিডিউলিং (Production Planning & Machine Scheduling) উৎপাদনের সঠিক পরিকল্পনা এবং মেশিনের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করে।

  • ডাইং প্ল্যান: কোন ব্যাচ কোন ডাইং মেশিনে যাবে, তার একটি কার্যকর শিডিউল তৈরি করা। মেশিনের ধরন, ক্ষমতা এবং ফেব্রিকের প্রকৃতির উপর ভিত্তি করে এই পরিকল্পনা করা হয়।

  • মেশিন ইউটিলাইজেশন: প্রতিটি মেশিনের কর্মক্ষমতা এবং ব্যবহারের হার পর্যবেক্ষণ করে প্রোডাকশন ফ্লোরকে আরও গতিশীল করা।

৪. ডাইং ফ্লোর প্রোডাকশন কন্ট্রোল (Dyeing Floor Production Control) এই মডিউলটি ডাইং মেশিনের সাথে সরাসরি সংযোগ স্থাপন করে পুরো প্রক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে।

  • প্রসেস প্যারামিটার কন্ট্রোল: প্রতিটি ব্যাচের জন্য রেসিপি অনুযায়ী সঠিক তাপমাত্রা, সময় এবং প্রেশার স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিয়ন্ত্রণ ও পর্যবেক্ষণ করা।

  • ডাইস ও কেমিক্যাল ডোজিং: রেসিপি অনুযায়ী সঠিক পরিমাণে এবং সঠিক সময়ে ডাইস ও কেমিক্যাল মেশিনে দেওয়ার প্রক্রিয়াটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরিচালনা করা।

  • সম্পদের ব্যবহার ট্র্যাকিং: প্রতিটি ব্যাচের জন্য ব্যবহৃত ডাইস, কেমিক্যাল, পানি এবং শক্তির (গ্যাস/স্টিম) পরিমাণ নির্ভুলভাবে রেকর্ড করা, যা কস্টিং এবং পরিবেশগত রিপোর্টিংয়ের জন্য অপরিহার্য।

৫. ফিনিশিং ও কোয়ালিটি অ্যাসিউরেন্স (Finishing & Quality Assurance) ডাইং-পরবর্তী ধাপগুলো এবং ফেব্রিকের চূড়ান্ত গুণগত মান নিশ্চিত করে।

  • ফিনিশিং প্রসেস ট্র্যাকিং: ডাইং-এর পর কাপড়কে স্টেনটারিং, কমপ্যাক্টিং বা অন্যান্য ফিনিশিং প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিয়ে যাওয়ার প্রতিটি ধাপ সিস্টেমে ট্র্যাক করা।

  • কোয়ালিটি কন্ট্রোল: চূড়ান্ত ফেব্রিকের শেড (রঙের গভীরতা), কালার ফাস্টনেস, জিএসএম (GSM), এবং শ্রিংকেজ (Shrinkage) পরীক্ষা করে তার ফলাফল ব্যাচের বিপরীতে রেকর্ড করা।

৬. কেমিক্যাল ও ডাইস ইনভেন্টরি (Chemical & Dyes Inventory) রাসায়নিকের সঠিক ও নিরাপদ মজুদ নিশ্চিত করে।

  • ইনভেন্টরি ট্র্যাকিং: ফ্যাক্টরিতে থাকা সকল প্রকার ডাইস ও কেমিক্যালের মজুদের রিয়েল-টাইম হিসাব রাখা এবং স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রোডাকশনে ব্যবহারের সাথে সাথে ইনভেন্টরি আপডেট করা।

  • মেয়াদ উত্তীর্ণ ব্যবস্থাপনা: যেসব কেমিক্যালের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পথে, সেগুলোর জন্য আগেই সতর্ক করা।

৭. কস্টিং ও এনভায়রনমেন্টাল রিপোর্টিং (Costing & Environmental Reporting) এটি ব্যবসার লাভজনকতা এবং পরিবেশগত দায়বদ্ধতা—উভয়ই নিশ্চিত করে।

  • ব্যাচ-ভিত্তিক কস্টিং: প্রতিটি ব্যাচ কাপড় ডাইং করতে ফেব্রিক, ডাইস, কেমিক্যাল, পানি, শক্তি এবং শ্রম মিলিয়ে মোট কত খরচ হলো, তার একটি নির্ভুল হিসাব বের করা।

  • এনভায়রনমেন্টাল কমপ্লায়েন্স: পানি ও রাসায়নিক ব্যবহারের উপর ভিত্তি করে এফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (ETP)-এর জন্য প্রয়োজনীয় রিপোর্ট তৈরি করা, যা পরিবেশগত অডিট এবং আন্তর্জাতিক কমপ্লায়েন্স (যেমন: ZDHC) পূরণে সহায়তা করে।

অটোবিজ ইআরপি যেখানে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি একাকার

আধুনিক ডাইং শিল্পে সাফল্য মানে শুধু সুন্দর রঙ নয়, বরং তা হতে হবে পরিবেশবান্ধব এবং সাশ্রয়ী। অটোবিজ ইআরপি একটি বিশেষায়িত সিস্টেম ডাইংয়ের শৈল্পিক প্রক্রিয়াকে নির্ভুল বিজ্ঞানে রূপান্তরিত করে। এর মাধ্যমে আপনি কেবল ধারাবাহিক গুণগত মানই নিশ্চিত করেন না, বরং সম্পদের অপচয় কমিয়ে এবং পরিবেশগত আইন মেনে চলে আপনার ব্যবসাকে একটি টেকসই ও বিশ্বমানের প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেন। এই প্রযুক্তিই আপনার ডাইং ব্যবসাকে একটি পরিবেশ-বান্ধব এবং লাভজনক ভবিষ্যতের দিকে নিয়ে যাওয়ার চাবিকাঠি।

Fully Customizable Industry Specific ERP software production of MAMTech Limited